
রাজবন্দীর জবানবন্দি-কাজী নজরুল ইসলাম
Reliable shipping
Flexible returns
রাজবন্দীর জবানবন্দি কাজী নজরুল ইসলামের একটি প্রভাবশালী রচনা, যা তার বিপ্লবী চেতনা ও রাজনৈতিক মতাদর্শকে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরেছে। এটি মূলত একটি সশস্ত্র সংগ্রামের সময় লেখা ছিল এবং কবির নিজস্ব জীবনযুদ্ধ ও বিদ্রোহী মনোভাবের একটি তীব্র প্রতিফলন। কবিতাটি নজরুলের সাহসী দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাঁর মুক্তির জন্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, এবং জনগণের জন্য লড়াই করার অঙ্গীকারের প্রতীক।
কবিতার বিষয়বস্তু:
"রাজবন্দীর জবানবন্দি" একটি রচনা যেখানে কাজী নজরুল ইসলাম ভারতের ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামের কথা বলেছেন। এটি তার জবানবন্দি হিসেবে একটি সাংবিধানিক বিবৃতি, যেখানে তিনি তার অধিকার, স্বাধীনতা এবং দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই কবিতায় তিনি সোজাসুজি ঘোষণা করেন যে, তিনি কোনোভাবেই ব্রিটিশ শাসন মেনে নেবেন না, বরং তারা যদি তাকে আটক করে তবে তার বন্দিত্বে কোনো অনুশোচনা থাকবে না।
নজরুল এখানে তার রাজনৈতিক অবস্থা, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এবং পুলিশের নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক সাহসী বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, "আমার মৃত্যু হবে, তবে আমি নত হবে না"। কবিতাটিতে নজরুল তাঁর চরম দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ব্রিটিশ শাসন অবিলম্বে নস্যাৎ করতে হবে, এবং এটি তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
কবিতার প্রধান ধারণা:
এই কবিতার মধ্যে নজরুল ইসলামের প্রতিবাদ, অসন্তোষ, এবং অধিকার আদায়ের জন্য তার অটল সংকল্প স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি বলছেন, "আমাকে যদি হত্যা করা হয়, তবে আমি একটাও আফসোস করব না, কারণ আমি আমার অধিকার এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি"। তিনি মনে করেন যে, কোন কিছুই তাকে তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। মৃত্যুর সম্মুখীন হলেও তিনি তার আদর্শ থেকে এক চুলও সরে যাবেন না।
এই কবিতায়, নজরুলের ভাষা এবং তার বিরুদ্ধাচরণ অত্যন্ত তীব্র, যা তার বিদ্রোহী মনোভাব এবং অঙ্গীকারের চিহ্ন। কবিতার মধ্যে তার সাহসিকতা, সৎসাহস এবং অধিকার আদায়ের প্রতি অটুট বিশ্বাসের প্রতিফলন স্পষ্ট।
কবিতার প্রতীকী অর্থ:
"রাজবন্দীর জবানবন্দি" শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং এটি স্বাধীনতার সংগ্রামের একটি অমর সঙ্গীত। কবি এখানে দেখিয়েছেন যে, সত্যের পথে চলতে গিয়ে কোনো কিছুরই ভয় করতে হয় না—না শাসক, না শাস্তি, না মৃত্যুর ভয়। তার সংগ্রাম এক মহান উদ্দেশ্যে পরিচালিত, যা জনগণের মুক্তির জন্য। কবিতাটি একজন সত্যিকার সংগ্রামী ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস এবং বিশ্বাসের এক শক্তিশালী সাক্ষ্য।
উপসংহার:
"রাজবন্দীর জবানবন্দি" কাজী নজরুল ইসলামের সাহসিকতার এবং তার বিপ্লবী চেতনার এক অবিস্মরণীয় রচনা। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি এক চিরকালীন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে, যা পাঠককে নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করে। নজরুলের এই কবিতা আজও আমাদের মনে জীবন্ত, তার সংগ্রামী মনোভাব এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য তার অটল সংকল্পের বার্তা বহন করে।