
মুখের দিকে দেখি-শহীদুল জহির
Reliable shipping
Flexible returns
"মুখের দিকে দেখি" শহীদুল জহিরের একটি অসাধারণ ছোট উপন্যাস, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যেখানে মানবিকতা, স্মৃতি, মৃত্যু এবং প্রেমের টানাপোড়েন খুব গভীরভাবে চিত্রিত হয়েছে।
---
উপন্যাসের সারাংশ:
"মুখের দিকে দেখি" গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে একজন তরুণী রোকেয়া এবং তার জীবনের গভীর ও জটিল ঘটনাগুলো। গল্পটি ঢাকার একটি পাড়াকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। রোকেয়া একসময় একটি মৃত্যুর সাক্ষী হয়, যা তার জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তার আত্মজিজ্ঞাসা, মানুষের সম্পর্ক, এবং সমাজের বিভিন্ন দ্বন্দ্ব উঠে আসে।
উপন্যাসটি একই সঙ্গে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক স্তরের বিভিন্ন জটিলতার প্রতিফলন। মৃত্যুর তাৎপর্য এবং এটি মানুষের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা লেখক গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন।
---
বইয়ের মূল বৈশিষ্ট্য:
1. গদ্যশৈলী: শহীদুল জহিরের লেখা বরাবরের মতোই কাব্যিক, গভীর এবং প্রাঞ্জল। তার বাক্যগুলোর মধ্যে থাকে এক ধরনের মায়াবী টান।
2. ম্যাজিক রিয়ালিজম: এখানে বাস্তবতার সঙ্গে রহস্যময় উপাদানের সমন্বয় দেখা যায়। সাধারণ ঘটনাগুলোকে তিনি একধরনের মিথিকাল রূপ দিয়েছেন।
3. চরিত্র চিত্রণ: রোকেয়া চরিত্রটি সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় প্রতিচ্ছবি। তার যন্ত্রণার গভীরতা, তার আবেগ এবং তার মানবিকতার প্রকাশ লেখক অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে চিত্রিত করেছেন।
4. সমাজ এবং মানব সম্পর্ক: এটি শুধু ব্যক্তিগত গল্প নয়; এটি একটি পাড়ার মানুষদের গল্প, সমাজের ভাঙা-গড়া, এবং মানুষের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের গল্প।
---
উপন্যাসের থিম:
1. মৃত্যু ও মানবিকতা: মৃত্যু এবং তার প্রতিক্রিয়া উপন্যাসের কেন্দ্রীয় থিম। মানুষের মৃত্যু কীভাবে অন্যদের জীবনে পরিবর্তন আনে, তা অত্যন্ত মর্মস্পর্শীভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
2. স্মৃতি ও সময়: স্মৃতি এবং সময়ের প্রবাহকে লেখক এমনভাবে চিত্রিত করেছেন, যা পাঠককে নিজস্ব জীবনের মুহূর্তগুলো নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
3. নারীর জীবন: রোকেয়ার চরিত্রের মাধ্যমে নারীর সামাজিক অবস্থান, তার সংগ্রাম এবং তার অস্তিত্বের গভীরতা তুলে ধরা হয়েছে।
4. সামাজিক বাস্তবতা: গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে শহুরে জীবনের দ্বন্দ্ব, সাম্প্রদায়িকতা, এবং সামাজিক অবক্ষয় এখানে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত।
---
গদ্যের বৈশিষ্ট্য:
শহীদুল জহিরের লেখা পাঠকের মনে এক ধরনের জাদুময় আবেশ সৃষ্টি করে। "মুখের দিকে দেখি" উপন্যাসেও সেই জাদু রয়েছে। তিনি একদিকে কাব্যিক, অন্যদিকে বাস্তবতার খুব কাছে। তার ভাষা সাধারণ পাঠক থেকে সাহিত্যপ্রেমী সবার জন্যই আকর্ষণীয়।
---
কেন পড়বেন:
1. শহীদুল জহিরের অনন্য গল্প বলার শৈলী উপভোগ করার জন্য।
2. মানবিক সম্পর্ক, মৃত্যু এবং স্মৃতি নিয়ে চিন্তার গভীরে যাওয়ার জন্য।
3. বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির গভীরতা এবং জটিলতা উপলব্ধি করার জন্য।
---
উপন্যাসের প্রভাব:
"মুখের দিকে দেখি" এমন একটি বই, যা পাঠকের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। এটি শুধুমাত্র একটি গল্প নয়; এটি মানুষের জীবনের এক অপার গভীরতার কথা বলে।
শহীদুল জহিরের লেখায় থাকা আন্তরিকতা, মায়া, এবং বেদনাবোধ এই উপন্যাসকে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।