মহাবিশ্ব (হুমায়ুন আজাদ)
মহাবিশ্ব (হুমায়ুন আজাদ)
Share
"মহাবিশ্ব" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
দশ থেকে বিশ বিলিয়ন বছর আগে মহাগর্জনে সৃষ্টি হয়েছিলাে মহাবিশ্ব; তারপর অনেক বিলিয়ন বছর। কেটে যায়, সাড়ে চার বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্টি হয় সৌরজগত, এবং আমাদের গ্রহ পৃথিবী, আমাদের চাদ, এবং আরাে গ্রহ, আরাে চাঁদ। কোনাে বিধাতা সৃষ্টি করে নি বিস্ময়কর মহাবিশ্ব, সৌরজগত, আর পৃথিবী; অনন্ত ঘন এক বিন্দুর বিস্ফোরণে সৃষ্টি হয়েছিলাে সব কিছু, আজো সৃষ্টি হয়ে চলছে। মহাবিশ্ব এক অনন্ত অসীম চিরসম্প্রসারণশীল এলাকা, আজো বেড়ে চলছে। মহাবিশ্ব জ্যোতির্বিজ্ঞান অসামান্য সব আবিষ্কার করে চলছে শতকে শতকে; আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে আমরা কোনাে স্থির বদ্ধ অচল পৃথিবীর মানুষ নই, আমরাও মহাশূন্যে অভিযাত্রী; পৃথিবী নামক অসাধারণ মহাশূন্যযানটি আমাদের নিয়ে ছুটে চলছে নিরন্তর। এক সময় সবাই ভাবতাে তারা আছে পৃথিবীর কেন্দ্রে, আর পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে সূর্য, চাঁদ, তারারা। প্রাচীন জ্ঞানীরাও বলেছেন পৃথিবী স্থির; মানুষের ধর্মের। বইগুলাে এ-ধারণাকে পরিণত করেছিলাে বদ্ধমূল বিশ্বাসে। সাড়ে পাঁচশাে বছর আগে কোপারনিকাস। বদলে দেন সৌরজগতকে; পৃথিবীর বদলে সূর্যকে বসান। কেন্দ্রে; এবং আবিষ্কৃত হয় সৌরজগতের শৃঙ্খলা। তারপর অনেক শতক কেটে গেছে, আবিষ্কৃত হয়েছে। মহাবিশ্বের অজস্র সত্য, মানুষ এগিয়েছে সামনের দিকে; কিন্তু এখন আমরা আবার ফিরে চলছি। পৌরাণিক জগতের দিকে, অনন্ত অসীম সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বকে ভুলে ঢুকছি আবার বদ্ধ পৃথিবীতে, এবং সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে বিভিন্ন রকম বিধাতারা। হুমায়ুন আজাদ মহাবিশ্ব লিখেছেন আজকের পৌরাণিক মানুষদের সামনে মহাবিশ্বকে পৌঁছে দেয়ার জন্যে; লিখেছেন বিস্ততভাবে। একজন কবি ঔপন্যাসিক। সমালােচক প্রাবন্ধিকের ছোঁয়ায় কবিতার মতাে হয়ে উঠেছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, এর প্রতিটি স্তবক পুরাণকে বাতিল করে এগিয়েছে বিজ্ঞানমনস্ক সময়ের দিকে।