বোবা কাহিনী-জসীমউদ্দিন
বোবা কাহিনী-জসীমউদ্দিন
Couldn't load pickup availability
বই: বোবা কাহিনী
লেখক: জসীমউদ্দিন
রিভিউ:
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি জসীমউদ্দিন, যিনি বাংলার গ্রামীণ জীবনের প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তার লেখনির অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ হচ্ছে "বোবা কাহিনী"। এই কবিতাটি আধুনিক বাংলা কবিতার এক অনবদ্য সৃষ্টি হিসেবে গণ্য হয়।
বোবা কাহিনী একটি গল্পের আকারে লেখা কবিতা, যেখানে একটি নিঃসঙ্গ, নিরীহ মানুষের জীবনের অমানবিক দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। এটি একটি সামাজিক যন্ত্রণার গল্প, যেখানে কবি মানুষের অনুভূতি এবং অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণা প্রদর্শন করেছেন। কবিতাটির মূল চরিত্র হচ্ছে এক ধরনের "বোবা" বা নির্বাক মানুষ, যিনি শব্দহীন অবস্থায় তার দুঃখ, বেদনা, এবং অসহায়ত্ব সহ্য করেন। জসীমউদ্দিন এই চরিত্রের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা এবং সমাজের অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ভাষ্য প্রদান করেছেন।
কবিতাটিতে সুর, চিত্রকল্প এবং ছন্দের ব্যবহার অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও মনোমুগ্ধকর। কবি গ্রামীণ সমাজের বেদনাগুলোকে, নিঃসঙ্গতা ও হতাশাকে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন। "বোবা কাহিনী"-তে রয়েছে মানবিকতার প্রতি এক মর্মস্পর্শী দৃষ্টিভঙ্গি, যা পাঠককে অনুধাবন করায়, জীবনের অন্ধকার এবং সেসব মানুষের কথা, যারা কোনো শব্দ বা প্রতিক্রিয়া ছাড়াই তাদের জীবনের যন্ত্রণা সহ্য করতে থাকে।
বিশ্লেষণ: এই কবিতাটি শুধুমাত্র একটি কবিতা নয়, এটি একটি সমাজতান্ত্রিক কবিতার চিত্র যেখানে মানবতার প্রতি এক গভীর প্রশ্ন তোলা হয়েছে। "বোবা কাহিনী" মানবের মৌলিক অধিকারের প্রতি আঘাতের চিত্র, যেখানে ভাষাহীন মানুষের অধিকার ও সত্ত্বার ওপর নির্দয় নির্যাতন করা হয়। জসীমউদ্দিনের ভাষা এবং কাব্যিক নিপুণতা এই কবিতাটিকে এক অনবদ্য রচনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
উপসংহার: "বোবা কাহিনী" কেবল একটি কবিতা নয়, এটি একটি শক্তিশালী সামাজিক বাণী, যা বর্তমান সমাজের অন্ধকার দিকগুলোকে সামনে আনে। জসীমউদ্দিনের এই রচনা বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রত্ন এবং সামাজিক প্রতিবাদের এক নিদর্শন।
Share
