প্রেমাতাল-মৌরি মরিয়ম
প্রেমাতাল-মৌরি মরিয়ম
Couldn't load pickup availability
"প্রেমাতাল মৌরি মরিয়ম" - বই পর্যালোচনা:
"প্রেমাতাল মৌরি মরিয়ম" বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় সাহিত্যিক, সেলিনা হোসেনের লেখা একটি আলোচিত উপন্যাস। এই বইটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার প্রভাবের মধ্যে এক নারীর ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং তার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র, মরিয়ম, যে নিজের জীবনের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক দ্বন্দ্বের মধ্যে হারিয়ে যায়, পাঠককে ভাবতে বাধ্য করে যুদ্ধের প্রকৃত অবস্থা এবং তার ব্যক্তিগত দুঃখ-দুর্দশা।
মরিয়ম একজন নারীর প্রতীক, যে যুদ্ধের অন্ধকারে তার পরিচয় খুঁজে পায় এবং যুদ্ধোত্তর সময়ে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। লেখিকা তার চরিত্রের মাধ্যমে নারীর আত্মবিশ্বাস, প্রেম, ক্ষতি, এবং পরিপূর্ণতার খোঁজে এক অনন্য যাত্রা তুলে ধরেছেন। বইটি পাঠকের সামনে তুলে আনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বেদনাদায়ক দৃশ্য এবং এক অভ্যন্তরীণ সংগ্রামের অসীম গভীরতা।
উপন্যাসটির শক্তি:
১. মনস্তাত্ত্বিক দিক: সেলিনা হোসেন উপন্যাসে চরিত্রের গভীর অনুভূতি এবং মানসিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন। মরিয়মের যন্ত্রণা, আশাহীনতা এবং সেসবের মধ্যেও তার আত্মবিশ্বাসের সন্ধান পাঠকদের অনুভূতির সাথে যুক্ত করে।
২. প্রতিক্রিয়া এবং বাস্তবতা: ১৯৭১ সালের যুদ্ধের বাস্তবতা এবং নারীর অবস্থানকে অত্যন্ত বাস্তবিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সমাজের একটি বড় অংশের চেতনা উদ্বুদ্ধ করে।
৩. ভাষা এবং স্টাইল: লেখিকার ভাষা সহজ কিন্তু গভীর, যা পাঠকের মনে এক গভীর ছাপ ফেলে।
উপসংহার:
"প্রেমাতাল মৌরি মরিয়ম" এক ধরনের মানবিক গল্প, যেখানে কেবল রাজনৈতিক ইতিহাস নয়, তার সাথে সম্পর্কিত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যক্তিগত কষ্টের বিষয়ও উঠে আসে। এটি শুধু একটি যুদ্ধের কাহিনী নয়, বরং নারীর ক্ষমতায়ন, আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনতার সংগ্রামের এক মনোযোগী চিত্র। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও নারীর ব্যক্তিগত সংগ্রাম নিয়ে আরও গভীরভাবে জানতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অমূল্য রচনা।