Skip to product information
1 of 1

ধূমকেতু-কাজী নজরুল ইসলাম

ধূমকেতু-কাজী নজরুল ইসলাম

Regular price Tk 340.00 BDT
Regular price Tk 400.00 BDT Sale price Tk 340.00 BDT
Sale Sold out
Shipping calculated at checkout.

ধূমকেতু কাজী নজরুল ইসলামের একটি বিখ্যাত কবিতা, যা তার বিদ্রোহী চেতনা এবং বিপ্লবী মনোভাবের প্রকাশ। কবিতাটি নজরুলের শক্তিশালী ভাষায় সমাজে বিদ্যমান শোষণ, অবিচার ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিবাদ হিসেবে দেখা যায়। "ধূমকেতু" কবিতায় তিনি নিজেকে এক ধূমকেতু বা উল্কাপিণ্ড হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যা শোষিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আকাশে উড়তে থাকে। কবিতার মাধ্যমে তিনি এক নতুন শক্তির উন্মোচন, বিপ্লবের আহ্বান এবং সমাজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে চান।

কবিতার মূল ভাবনা:

"ধূমকেতু" কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম একটি বিপ্লবী মনোভাবের সঙ্গে বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে ধূমকেতু বা উল্কাপিণ্ডের প্রতীক ব্যবহার করেছেন। কবি নিজেকে এক অগ্নিবর্ণ উল্কাপিণ্ড হিসেবে কল্পনা করেছেন, যা পৃথিবীতে ধ্বংস এবং নতুন জীবন এবং নতুন শক্তি নিয়ে আসবে। কবিতায় তিনি বলেন, "ধূমকেতু আমি, আমার পথ, আমার দৃষ্টি—সবকিছুই চিরস্থায়ী বিপ্লবী"—এটি তার বিদ্রোহী প্রকৃতি এবং শোষিত মানুষের জন্য সংগ্রামের দৃঢ় সংকল্পের প্রকাশ।

নজরুলের কবিতায় ধূমকেতু শুধু ধ্বংসের প্রতীক নয়, বরং এটি নতুন শক্তি, মুক্তি এবং ন্যায়ের জন্য সংগ্রামের একটি উদাহরণ। কবি চান, সমাজের অন্ধকার দূর হয়ে একটি নতুন আলোর সূচনা হোক, যেখানে মানুষের সমান অধিকার এবং ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

কবিতার প্রতীকী অর্থ:

কবিতায় ধূমকেতু একটি বিপ্লবী শক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি আগুন এবং ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন জীবন, নতুন শক্তি এবং সমাজে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানায়। ধূমকেতু আকাশে ঝলকানি দিয়ে চলে, কিন্তু তার প্রভাব পৃথিবীতে গভীর এবং বিস্তৃত হয়—এইভাবে কবি তার বিদ্রোহী চেতনা এবং সামাজিক পরিবর্তনের জন্য এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের কথা বলেছেন।

এছাড়া, ধূমকেতুর মাধ্যমে কবি জানান যে, প্রতিটি বিপ্লবী ব্যক্তিত্বকে সমাজে এক নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে চলতে হবে। তার পথ কখনো সহজ নয়, তবে তার উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট: এক শোষণমুক্ত, সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।

কবিতার ভাষা ও ছন্দ:

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার ভাষা সাধারণত অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সোজাসুজি। "ধূমকেতু" কবিতায়ও তার ভাষার শক্তি এবং তীব্রতা অনুভূত হয়। কবির ভাষায় এক ধরনের আগ্রহ এবং উত্তেজনা রয়েছে, যা পাঠককে বিপ্লবের দিকে ধাবিত করে। কবিতার ছন্দ সুরেলা এবং উচ্চকিত, যা পাঠককে বিদ্রোহী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। কবিতার মধ্যে যে তীব্রতা এবং জ্বালা রয়েছে, তা সমাজের অবিচারের বিরুদ্ধে এক গভীর প্রতিবাদ এবং তার পরিবর্তনের আহ্বান জানায়।

উপসংহার:

"ধূমকেতু" কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম তার বিপ্লবী চেতনা এবং শোষণ-বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। কবিতাটি শোষিত জনগণের মুক্তির জন্য এক শক্তিশালী আহ্বান, যা সমাজের অন্ধকারে নতুন আলোর সন্ধান দেয়। ধূমকেতুর মাধ্যমে নজরুল যে বার্তা দিতে চেয়েছেন তা হলো, প্রতিটি বিপ্লবী শক্তি একদিন সমাজের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলবে এবং মানুষের মধ্যে মুক্তির অনুভূতি জন্মাবে। এটি একটি মহান সংগ্রামের প্রতীক, যা আজও আমাদের শোষণ, বৈষম্য এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালানোর প্রেরণা দেয়।

View full details