গাভী বিত্তান্ত - আহমদ ছফা
গাভী বিত্তান্ত - আহমদ ছফা
Couldn't load pickup availability
ছফা বাংলাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তাঁর রচিত গাভী বিত্তান্ত একটি শক্তিশালী সমাজচিন্তা ও বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরে। এই উপন্যাসটি প্রথম ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয় এবং তখন থেকেই এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মাইলফলক হিসেবে পরিগণিত।
গাভী বিত্তান্ত মূলত একজন গরীব কৃষক হাশেম ও তাঁর গাভী নিয়ে এক অদ্ভুত যাত্রার কাহিনী। হাশেমের গাভী তার জীবনের একমাত্র সম্বল, কিন্তু এক অদৃশ্য ও সামাজিক সংকটের কারণে তাকে তার গাভী বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। এই উপন্যাসটি আমাদের সমাজের সামাজিক, অর্থনৈতিক, ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে গভীরভাবে তুলে ধরে। হাশেমের গাভী বিক্রি করার দৃশ্যটি শুধু এক নৈরাজ্যকে চিত্রিত করে না, বরং মানুষের জীবনে অমানবিকতা ও মানবিক সংকটের মধ্যে যে বিরাট পার্থক্য থাকে, সেটিও উন্মোচন করে।
উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র হাশেম এবং তাঁর গাভী, যা কেবল একটি শারীরিক বস্তু নয়, বরং একটি প্রতীক। গাভীর মাধ্যমে আহমদ ছফা আমাদের দেখিয়েছেন কীভাবে সমাজের নিঃসঙ্গ, অবহেলিত মানুষদের জীবনে অন্ধকারময়তা ও যন্ত্রণা ক্রমাগত বাড়ে। সমাজের শ্রেণী বিভাজন, অর্থনৈতিক অস্থিরতা, এবং ব্যক্তিগত সংকটগুলো এখানে ব্যাপকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
গাভী বিত্তান্তের ভাষা এবং গঠনও বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। আহমদ ছফার ভাষা সোজাসাপ্টা, কিন্তু গভীর এবং প্রাঞ্জল। তিনি যেভাবে মানবিক আবেগ এবং সামাজিক বাস্তবতাকে একত্রিত করেছেন, তা পাঠককে ভাবতে বাধ্য করে। উপন্যাসটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক বা সামাজিক একটি মন্তব্য নয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রশ্নও উত্থাপন করে।
সবমিলিয়ে, গাভী বিত্তান্ত একটি দারুণ সাহিত্যের কাজ যা আজও আমাদের সমাজের নানা দিক সম্পর্কে অবগত করতে সাহায্য করে। এটি শুধু উপন্যাস নয়, একটি প্রতিবাদও বটে, যা মানুষের মানবাধিকার, মর্যাদা, এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে।
Share
