খোয়াবনামা-আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
খোয়াবনামা-আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
Share
খোয়াবনামা (Khowabanama) আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের একটি অন্যতম প্রখ্যাত উপন্যাস। এই উপন্যাসে তিনি বাংলাদেশের ১৯৭০-এর দশকের একটি বিশেষ সময়কালকে তুলে ধরেছেন। "খোয়াবনামা" শব্দটির আভিধানিক অর্থ 'স্বপ্নের বই', কিন্তু লেখক এর মাধ্যমে একটি গভীর সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে উপস্থাপন করেছেন, যা মূলত মানুষের স্বপ্ন, আশা এবং হতাশার গল্প।
উপন্যাসের সারাংশ
"খোয়াবনামা" মূলত একটি গ্রামের পটভূমিতে আবর্তিত। এর প্রধান চরিত্রদের মধ্যে রয়েছে একজন নরসুন্দর, একজন শিক্ষক এবং কিছু সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রাম। ইলিয়াস তাদের মাধ্যমে সমাজের অন্ধকার দিকগুলোর কথা তুলে ধরেছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সমস্যা এবং মানুষের জীবনে পুঁজি ও শ্রেণী বিভাজনের প্রভাব – এসবের মাঝখানে তারা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চায়।
লেখার শৈলী ও ভাষা
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ভাষা প্রাঞ্জল এবং সরল হলেও তার মধ্যে গভীর ভাবনা এবং চিন্তার প্রকাশ ঘটে। তাঁর নির্মম বর্ণনা, চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দিকের বিশ্লেষণ এবং সমাজের বাস্তবতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।
থিম
"খোয়াবনামা" উপন্যাসের মূল থিম হলো সমাজের ভাঙন, ক্ষোভ এবং মানুষের আত্মসংগ্রাম। এই উপন্যাসে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস দেখিয়েছেন, কীভাবে মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন একে অপরকে প্রভাবিত করে। তার লেখায় সত্ত্বার অবক্ষয়, মূল্যবোধের পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা ফুটে ওঠে।
সমালোচনা
এই উপন্যাসে কিছু পাঠক হয়তো সামাজিক বাস্তবতার কঠোর ও অন্ধকার দিক দেখে অবাক হতে পারেন। কিন্তু এটি এক ধরনের রূঢ় সত্যকে তুলে ধরে, যা আমাদের সমাজের অন্তর্নিহিত অস্থিরতা ও সমস্যাকে জানিয়ে দেয়।
উপসংহার
খোয়াবনামা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক এবং সামাজিক উপন্যাস, যা মানুষকে তাদের নিজেদের অস্তিত্ব এবং জাতীয় চেতনার প্রতি সচেতন করে তোলে। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের এই উপন্যাস বাংলাদেশের সমসাময়িক ইতিহাস ও সংস্কৃতির এ
কটি অমূল্য নিদর্শন।