কুরআনের সাথে হৃদয়ের কথা - শাইখ ইবরাহীম আস সাকরান
কুরআনের সাথে হৃদয়ের কথা - শাইখ ইবরাহীম আস সাকরান
Share
আমাদের কাছে একটি সুমহান কিতাব আছে যার সংস্পর্শ আমাদের অন্তরকে করে আর্দ্র, আমাদের জীবনকে করে অর্থবহুল। এটি সেই কিতাব যা অতৃপ্ত, অশান্ত হ্রদয়কে প্রদান করে প্রশান্তি, প্রসন্নতা, নিশ্চয়তা ও পরিতৃপ্তির নিয়ামত। পথ হারিয়ে বিক্ষিপ্ত ছুটে চলা কতশত মানব-মানবী এ কিতাবের ছোঁয়ায় খুঁজে পেয়েছে পথের দিশা। এই কিতাব কতশত জীবনে সাধন করেছে উৎকর্ষ আর তাইতো তারা হয়ে উঠেছে বিশ্ববাসীর জন্য আদর্শ; তাওহিদের পতাকার আদর্শ বাহক। এই কিতাবটি যেন আশ্চর্য এক পরশপাথর। বলছিলাম, আল কুরআনুল কারিমের কথা।
.
কিন্তু, মানুষ তো গাফিল, সময়ের সাথে সাথে সে ভুলে যায়। কুরআনের সাথে তার সম্পর্ক ক্ষীণ হতে থাকে, কুরআন পড়তে গড়িমসি করে। কুরআন পড়ে সে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কুরআন নিয়ে চিন্তা-ফিকির (তাদাব্বুর) করে না। লেখক ইবরাহিম আস সাকরান তাই ‘কুরআনের সাথে হৃদয়ের কথা’ বইতে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত নিয়ে তাদাব্বুর করেছেন। গল্পকথায় সৃষ্টিশীল গদ্যে অনিন্দ্য রচনাশৈলীতে লেখক যেন কুরআনুল কারিমের আলোকে ব্যক্ত করেছেন হৃদয়ের কথা। সেই কথাগুলো হ্রদয়ে সঞ্চারন করে সঞ্জীবনী সুধা, আত্মাকে অনুপ্রাণিত করে কুরআন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জীবন সাজাতে।
.
বইতে মোট ১২টি ছোট ছোট অধ্যায়ে কুরআনের নানা আয়াতের আলোকে লেখক প্রদান করেছেন বাস্তবমুখী নানা শিক্ষা। উদাসীনতার চাঁদরে গা ঢাকা দিয়ে মৃত্যুকে ভুলে যাওয়া এই আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে লেখক তূলে ধরেছেন মৃত্যুর সুনিশ্চিত বাস্তবতা আর মনে করিয়ে দিয়েছেন তাওবাহ, সাদাকাহ ও যিকিরের গুরুত্বের কথা। কখনো কিয়ামতের বিভিষীকাময় পরিস্থিতির অবতারণা করে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের পরিস্থিতি বর্ণনা করে নেক আমলে উৎসাহ দিয়েছেন।
হৃদয়ের কাঠিন্য, ঈমান কমে যাওয়া, অন্তরে মুনাফেকি ব্যধির বিস্তার রোধে লেখক সুলুক সন্ধান করেছেন এসব অন্তরের রোগের মূল কারণের। আমরা যদি অনবরত গুনাহ করে যাই, আল্লাহর কালামের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা গ্রহণ ও প্রচার করি এবং আল্লাহর স্মরণবিমুখ হয়ে যাই তবে আমাদের অন্তর শক্ত হয়ে যেতে বাধ্য। দানে কৃপণতা, হেলামি ও গোঁড়ামিপূর্ণ আচরণ ও নিয়ন্ত্রণহীন জবান আমাদেরকে ধীরে ধীরে শামিল করবে মুনাফিকদের কাতারে। তাই এখনই সময়, পরিবর্তনের।
.
বইতে পাঠক খুঁজে পাবেন সফলতার টোটকাও। গড়িমসি ত্যাগ করে বিনয়াবনত সালাতই পারে আমাদের চরিত্রকে উৎকর্ষ প্রদান করতে।তাহাজ্জুদ ও যিকিরের গুণেই আমরা পারবো সফল মানুষ ও দ্বাঈ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে, ইলমের সুফল ভোগ করতে, প্রসন্ন হৃদয়ের অধিকারী হতে। আল্লাহর অধিক স্মরণই পারে আমাদের দুঃখে প্রশান্তির প্রলেপ যোগাবে, বিপদ থেকে আমাদের মুক্তি দিবে।