
আগুনের পরশমণি by হুমায়ূন আহমেদ
Reliable shipping
Flexible returns
আগুনের পরশমণি হুমায়ূন আহমেদের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস, যা ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত। এটি শুধু একটি গল্প নয়, বরং যুদ্ধে সাধারণ মানুষের মনোভাব, বেঁচে থাকার লড়াই এবং দেশপ্রেমের গভীর অনুভূতির গল্প।
পটভূমি
উপন্যাসটির মূল চরিত্র রূপা, তার পরিবার এবং আশেপাশের কিছু প্রতিবেশীদের জীবনে যুদ্ধে ঘটমান পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে। গল্পে যুদ্ধের ভয়াবহতা, সম্পর্কের পরিবর্তন, ভালোবাসা, এবং জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের অসহায়ত্ব খুবই বাস্তবধর্মীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
কাহিনি সংক্ষেপ
উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র রূপার বাবা একজন সরকারী কর্মকর্তা, যিনি যুদ্ধে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে বাড়িতে রয়েছেন। তাদের বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়। গল্পে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রাম এবং তাদের পরোপকারিতা প্রখরভাবে উঠে এসেছে। এছাড়াও স্থানীয় মক্তবের শিক্ষকের মাধ্যমে গ্রামের সাধারণ মানুষের মনোভাব এবং তাদের অসহায়তা বোঝানো হয়েছে।
গল্পের আরও একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হচ্ছে বাবু, যিনি নিজের দায়িত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করে। তার সাহসিকতা এবং দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত পাঠকদের অনুপ্রাণিত করে। গল্পের শেষাংশে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় এবং হার-জিতের মূল্যায়ন পাঠকের মনে গভীর দাগ কাটে।
বিশেষত্ব
মানবিক অনুভূতির উন্মোচন: মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ভয়, প্রেম, ক্ষতি এবং আশা; প্রতিটি অনুভূতির সূক্ষ্ম চিত্রায়ণ পাঠকদের আবেগের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে।
বাস্তবধর্মী বিবরণ: হুমায়ূন আহমেদ তার সহজ ভাষা এবং বর্ণনার গভীরতায় মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সামাজিক ও মানসিক অবস্থা নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন।
চরিত্র চিত্রণ: রূপা, তার বাবা-মা, এবং অন্যান্য চরিত্রগুলো খুবই জীবন্ত, যা পড়তে পড়তে মনে হয় যেন পাঠক নিজেও সেই সময়ে উপস্থিত।
পাঠকের প্রতিক্রিয়া
এই বইটি মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এটি শুধুমাত্র ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়, বরং একটি মূল্যবান মানবিক দলিল। যারা মুক্তিযুদ্ধ এবং তার প্রভাব নিয়ে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য বই।
উপসংহার
"আগুনের পরশমণি" স্বাধীনতার ইতিহাসকে কেবল বইয়ের পাতায় আটকে রাখেনি, বরং মানুষের হৃদয়ে জীবন্ত করে তুলেছে। এটি একটি হৃদয়স্পর্শী গল্প, যা পাঠকদের দেশপ্রেম এবং ত্যাগের মূল্য বুঝতে সহায়তা করে।