বন্দিনী-তাসলিমা নাসরিন
বন্দিনী-তাসলিমা নাসরিন
Couldn't load pickup availability
বন্দিনী
লেখক: তাসলিমা নাসরিন
প্রকাশকাল: ২০২০
তাসলিমা নাসরিনের লেখা "বন্দিনী" তার ব্যক্তিগত জীবনের একটি হৃদয়বিদারক অধ্যায়কে কেন্দ্র করে রচিত একটি স্মৃতিকথা। এটি মূলত তার দিল্লির বাড়িতে আটকে থাকার সময়কাল এবং এর ফলে সৃষ্ট মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক সংগ্রামের একটি বিশ্লেষণ। বইটি পাঠকদের সামনে লেখকের বন্দিত্বের সময়কাল, তার ভয়, অসহায়ত্ব এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে।
বইয়ের প্রধান বিষয়বস্তু:
"বন্দিনী" তাসলিমা নাসরিনের পলাতক জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়। ভারতে নির্বাসিত অবস্থায় তাকে যখন দিল্লির একটি বাড়িতে নজরবন্দি অবস্থায় রাখা হয়, তখন সেই সময়ের অভিজ্ঞতা, একাকীত্ব এবং মানসিক যন্ত্রণা এই বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য। তিনি একটি ছোট ঘরে বন্দি থেকে তার স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন।
বইটি শুধু তার ব্যক্তিগত জীবন নয়, বরং নারী অধিকার, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং সামাজিক বৈষম্যের প্রসঙ্গেও গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত করে। তার সাহসিকতার এবং নির্ভীক লেখনীর জন্য তাকে যেমন প্রশংসা করা হয়েছে, তেমনই তাকে অসহনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।
শৈলী ও প্রকাশভঙ্গি:
তাসলিমার লেখার ভঙ্গি অত্যন্ত সরল এবং আবেগপ্রবণ। তিনি জটিল ঘটনাগুলোকে সহজ ভাষায়, কিন্তু গভীরভাবে বর্ণনা করেছেন। পাঠক তার ভেতরকার ব্যথা অনুভব করতে পারে। বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় তার নিঃসঙ্গতা, ক্ষোভ এবং স্বাধীনতার প্রতি আকাঙ্ক্ষা ফুটে ওঠে।
মূল বার্তা:
"বন্দিনী" একজন নারীর সংগ্রাম, শক্তি এবং আত্মমর্যাদার প্রতীক। এটি শুধু তার জীবনের একটি অধ্যায় নয়, বরং সমাজের মুক্তচিন্তা এবং মানবাধিকারের জন্য লড়াইয়ের একটি শক্তিশালী দলিল।
সমালোচনা:
তাসলিমা নাসরিনের লেখনী অনেক সময় বিতর্কিত হয়ে ওঠে। তবে এই বইতে তার আবেগ এবং সত্যের প্রতি অনুগত থাকা পাঠকদের মুগ্ধ করবে। কিছু পাঠক তার অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ বর্ণনাকে দীর্ঘায়িত বলে মনে করতে পারেন, তবে এটি তার অভিজ্ঞতার প্রকৃত গভীরতা তুলে ধরে।
উপসংহার:
"বন্দিনী" একটি মর্মস্পর্শী এবং চিন্তাপ্রবণ বই, যা পাঠকদের মানবাধিকার, নারীর স্বাধীনতা এবং সমাজের অবিচারের বিষয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। যারা সাহসী এবং সৎ লেখনী পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি
অবশ্যপাঠ্য।
রেটিং: ৪.৫/৫
Share
